বাংলাদেশের প্রত্যেকটা নাগরিকের খুব প্রয়োজনীয় একটা নথি হচ্ছে nid card আপনি কি জানেন এই এনআইডি কার্ড কি? কিভাবে পেতে পারি এবং এনআইডি রিলেটেড আরো বেশ কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আপনি যদি বাংলাদেশের যেকোনো সরকারিভাবে সরকারি সেবা পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা এনআইডি থাকা লাগবে। তো আপনারে যারা এনআইডি কার্ড রিলেটেড বিভিন্ন কিছু বিষয় জানেন না তারা আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন।
আরো পড়ুন – smart nid status check | স্মার্ট কার্ড স্ট্যাটাস চেক করুন
এনআইডি কার্ড কি আপনার জন্য জরুরী? যদি জরুরি হয় কেন? কি কি সুবিধা রয়েছে এসব বিষয় জানতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। তাহলে আর দেরি কেন আমরা আর কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনার দিকে চলে যায়।
nid card কি?
এন আইডি কার্ড (জাতীয় পরিচয় পত্র) যেটা অনেকেই ন্যাশনাল আইডেন্টিটি কার্ড নামে চিনে থাকে। এটি হচ্ছে বাংলাদেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি নথি যা নাগরিক ১৮ বছর পদার্পণ করার পরে নতিভুক্ত করা হয়। আর আইডি কার্ড সরবরাহকারী এবং নথিভুক্ত কারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে service nidw gov bd বা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।
মূলত এই নথিটি (বায়োমেট্রিক আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন) বাংলাদেশে ২০০৮ সাল থেকেই প্রচলিত হয়। যারা ১৮ বছর হয়েছে বা তার বেশি পদার্পণ করেছে তাদের সকলকেই এই নথিভুক্ত করা হয়। যেটা কিনা বাংলাদেশ ইলেকশন চলাকালীন ভোট দেওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রয়োজন।
বাংলাদেশের মধ্যে ২০১৬ সালের আগে সাধারণ যে সমস্ত আইডেন্টিটি কার্ড রয়েছে সেগুলো সরবরাহ করা হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে স্মার্ট জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করা হয় যেখানে চিপ যুক্ত থাকে এবং প্লাস্টিক জাতীয়।
পুরাতন কিংবা সাধারণ আইডি কার্ডের মধ্যে শুধুমাত্র ব্যক্তির নাম, মা বাবার নাম, ব্যক্তির জন্ম তারিখ এবং স্বাক্ষর ইত্যাদি উল্লেখ করা থাকে। অন্যদিকে স্মার্ট জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে ব্যক্তির সমস্ত তথ্য connected করে দেওয়া।
জাতীয় পরিচয়পত্র কেন প্রয়োজন?
আপনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য এই নথি (nid card) বাধ্যতামূলক কিংবা খুবই প্রয়োজন। কেননা আপনার কাছে যদি এনআইডি কার্ড কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকে তাহলে আপনি তেমন কোন সুবিধা পাবেন না।
আপনার ছেলে মেয়ে যদি ডক্টর ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই সে ক্ষেত্রে ও মা বাবার পরিচয় এর ক্ষেত্রে আপনাদের এনআইডি প্রয়োজন। আপনার আইডেন্টিটি কার্ড ছাড়া তো আর ছেলেমেয়ের এনআইডি হবে না।
আপনার বিদেশ ভ্রমণ, হজ থেকে শুরু করে ব্যাংক একাউন্ট খুলতেও এখন প্রয়োজন আইডেন্টিটি কার্ড। এমনকি ইলেকশনের সময় আপনি যদি বুট দিতে চান সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়বে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র।
আপনি নিজেই বলুন এমন কি নেই যেখানে এন আইডি কার্ড প্রয়োজন পড়ে না? আপনি যদি আপনার ব্যবসার লাইসেন্স করাতে চান, সে ক্ষেত্রেও প্রয়োজন পড়বে এনআইডি। তাছাড়া সিম রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করি আরো অনেক খাতে প্রয়োজন আমাদের nid। তাছাড়া চলুন কয়েকটা প্রয়োজন এর দিক জেনে আসি –
- ব্যাংক একাউন্ট খুলতে
- পাসপোর্ট কিংবা ভিসা করাতে
- ছেলে মেয়ের ভোটার আইডি কার্ড করাতে
- ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে চাইলে
- সরকারি সেবা যেমন অনুদান ও ভাতা ইত্যাদি
- টিন নাম্বার পেতেও প্রয়োজন এনআইডি
- ব্যাংক থেকে ঋণ বা লোন নিতে চাইলে
- চাকরির আবেদন করতে
- জমিজমা ক্রয় বিক্রয় করতে ইত্যাদি
এগুলো ছাড়াও আরো জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজনের অনেক খাত রয়েছে। তাই আপনি যদি এই সেবাগুলো ছাড়াও প্রায় অনেক ধরনের সেবা পেতে চান, তাহলে আপনার জন্য বাধ্যতামূলক এনআইডি কার্ড।
nid card অনলাইন বিভিন্ন সেবা সম্পর্কে জানুন
এখন আমরা আপনাদের সাথে কয়েকটা এমন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনলাইন সেবার কথা জানাবো যেগুলো হয়তো আপনারা জানেন না। যেমন আমরা অনেকেই ভোটার আইডি কার্ড করে ফেলেছি কিন্তু অনলাইন থেকে Nid card download করতে না জানার কারণে আইডি কার্ড হাতে পাইনা।
আবার অনেকের আইডি কার্ড ডাউনলোড করার পর দেখতে পাই যে বিভিন্ন নাম ঠিকানা তাদের মধ্যে ভুল রয়েছে। সেগুলো চাইলে আপনি সংশোধন করতে পারবেন অনলাইন আবেদন করার মাধ্যমে।
এরকম আরো বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইট কর্তৃক অনেকগুলো সেবা পাওয়া যায়। যেগুলো কিনে আমরা এই ওয়েবসাইট কে সঠিক ব্যবহার করে না জানার কারণে করতে পারিনা।
আরো পড়ুন – ভোটার আইডি কার্ড চেক | Nid card check
তাই এখন আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি এমন কয়েকটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সেবা সম্পর্কে। যেগুলো আমাদের কিংবা আমাদের আশেপাশে অনেক মানুষের প্রয়োজন। তাহলে চলুন আমরা সেগুলো জেনে আসি এবং পরে বিস্তারিতভাবে জানা যাবে।
১/ আইডি কার্ড না থাকলে আবেদন করুন
আপনার ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত আইডি কার্ড পান নাই? তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই। সহজ একটা প্রক্রিয়া অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অনলাইন হিসাবের মাধ্যমে নতুনভাবে আবেদন করতে পারবেন।
মূলত এই বিষয়টা ও অনেকেই না জানার কারণে অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করি কখন জানি ভোটার হালনাগাদ শুরু হয়। আপনি চাইলেই যে কোন সময় অনলাইন থেকে আপনার নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তবে তার জন্য নির্দিষ্ট একটা নিয়ম রয়েছে নিয়মটা জানতে চাইলে আপনি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম এই আর্টিকেলটা পড়ে আসুন আমার ওয়েবসাইট থেকে। এবং সর্বশেষ জেনে নিন আপনাকে কোথায় কি করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কি কি।
২/ এনআইডি ডাউনলোড করুন অনলাইন থেকে
আমরা অনেকেই নতুন জাতীয় পরিচয় পত্র করে ফেলেছি। কিন্তু অনেকে ই অনেকদিন অপেক্ষা করে যে, আমার আইডি কার্ড আসছে না কেন? মূলত তারাই জানে না যে, নিজের আইডি কার্ড তৈরি হয়ে গেছে। কিন্তু সঠিক ভাবে ডাউনলোড করতে না জানার কারণে নিজের আইডি কার্ড টা হাতে নিতে পারছে না।
তাই আপনি যদি দেখতে পান যে, আপনার মোবাইলের মধ্যে sms চলে এসেছে রেডি হয়েছে এই বলেই আপনার nid card। তাহলে আর দেরি কেন এখনই nid card download করে নিন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইট থেকে।
তো এ বিষয়টি জানতে পারতে তো আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রটা অনলাইন থেকে কিভাবে ডাউনলোড করতে হয় এই বিষয়টা জানতে চাইলে আমার এই রিলেটেড একটা আর্টিকেল রয়েছে সেটা পড়ে আসুন।
৩/ nid card ভুল হলে সংশোধন করুন
আপনার আইডি কার্ড করে ফেলেছেন এবং ডাউনলোড করে ফেলেছেন? সর্বশেষ ডাউনলোড করার পরে দেখতে পাচ্ছেন যে, আপনার নাম জন্মতারিখ কিংবা ঠিকানা ইত্যাদির মধ্যে কোথাও ভুল হয়েছে।
তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই! আপনি সহজ একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনলাইন থেকে আপনার Nid correction আবেদন করতে পারবেন। তবে কিভাবে করতে হবে এটা জানতে হবে তাই না? এই রিলেটেড যদি আর্টিকেল পাবলিশ করা হয় ইনশাল্লাহ এখানে দিয়ে দেওয়া হবে।
৪/ জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে পুনরায় উত্তোলন
আপনার আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে? তাহলে সেটা পুনরাই উত্তোলনের আবেদন করতে পারবেন না অনলাইন থেকে। তবে তার জন্য অবশ্যই আপনার এন আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে এই বলে একটা আপনার নিকটস্থ থানায় জিডি করাতে হবে।
পরবর্তীতে আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন এবং সেটা আপনার নিকটস্থ ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা নির্বাচন কার্যালয়ে দেখাবেন। আপনার সবগুলো ঠিকঠাক থাকলে তারা যাচাই-বাছাই করে আপনার আইডি কার্ডটা পুনরায় ইস্যু করে দিবে।
এনআইডি কার্ড কারা করাতে পারবে
বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক চাইলেই ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পরে জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা ন্যাশনাল আইডেন্টিটি কার্ড করাতে পারবে। তবে তার জন্য বেশি নির্দিষ্ট কিছু রিকোয়ারমেন্ট রয়েছে যেমন মা বাবার আইডেন্টিটি কার্ড ইত্যাদি।
আরো পড়ুন – ভোটার তথ্য যাচাই | Voter Information Verification
তাই আপনারা যারা এখনো পর্যন্ত ভোটার আইডি কার্ড করেন নাই অবশ্যই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করে ফেলার চেষ্টা করবেন। কেননা অনেক ক্ষেত্রে আমাদের এটার প্রয়োজন পড়ে যেগুলো কিনা আমি উপরে বিস্তারিত শেয়ার করেছি।
download | nid card download |
registration | nid registration |
check | id card online check |
jachai | jonmo nibondon jachai |
nidw website | BD election commission |
FAQ
বিশেষ করে এনআইডি কার্ড আপনার জাতীয়তা নিশ্চিতকরণেই প্রয়োজন। এক কথায় বলতে গেলে আপনি যে বাংলাদেশী এর পরিচয় বহন করবে একমাত্র আপনার ন্যাশনাল আইডেন্টিটি কার্ডের উপর। তাছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্র যেমন ব্যাংক একাউন্ট, সিম রেজিস্ট্রেশন সহ আর নয় কাজে ব্যবহার হয় এই nid card।
বাংলাদেশ নিয়ম অনুসারে আপনি যদি আইডি কার্ড করাতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার বয়স ১৮ কিংবা এর উপর হতে হবে। তাই যতদিন পর্যন্ত আপনার বয়স ১৮ হয় নাই আপনি আইডি কার্ড করাতে পারবেন না। আর যদি আপনার বয়স পরিপূর্ণ হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই আপনি তাড়াতাড়ি করিয়ে ফেলবেন।
উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে বাংলাদেশ বায়োমেট্রিক আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন ২০০৮ সাল থেকেই শুরু হয়। তবে প্রথম দিকে নরমাল জাতীয় পরিচয় পত্র থাকলেও ২০১৬ সালে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রচলন শুরু করা হয়।