বিদেশ ভ্রমণ, হজ থেকে শুরু করে যে কোন কাজে বৈধভাবে বিদেশে যেতে চাইলে প্রয়োজন পড়বে পাসপোর্ট এর। তো এখন পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে এ বিষয়টা প্রত্যেকের জানা উচিত যারা কিনা পাসপোর্ট করতে চায়।
পাসপোর্ট মূলত এমন নথি যেটা কোন দেশের ভ্রমণ করতে ব্যবহৃত হয়। পাসপোর্ট করার জন্য সরকারি পাসপোর্ট অফিস অথবা দূতাবাসে আবেদন করতে হয়। এই পাসপোর্ট ধারককে বিদেশের ভিসা পাওয়া বা এন্ট্রির জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়।
পাসপোর্ট এর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন কাজ করতে পারেন যেমন উচ্চশিক্ষার আশায় বৈদেশিক ভিসা, কাজের ভিসা পেতেও সহায়তা করে। অন্যান্য কান্ট্রিগুলোতে আপনার এন্ট্রির আইডেন্টিফিকেশন করবে এই পাসপোর্ট।
এখন অনেকের প্রশ্ন জাগতে পারে, আমি উচ্চ শিক্ষায় বিদেশ গমন/কাজের ক্ষেত্রে বিদেশ যেতে চাই। এক্ষেত্রে তো অবশ্যই পাসপোর্ট এর প্রয়োজন তো পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, মূলত তা জানানোর চেষ্টা করব আজকের এই নিবন্ধে।
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
পাসপোর্ট করার জন্য পাসপোর্ট আবেদন ফরম, জন্ম নিবন্ধন, ঠিকানা প্রমাণ পত্র, মৃত্যু সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), পাসপোর্ট সাইজের ছবি, এনআইডি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং ট্যাক্স রশিদ পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজন।
এখন তো আমরা সংক্ষিপ্ত আকারে What does it take to get a passport এই প্রশ্নের উত্তরটা আপনাদের সাথে তুলে ধরলাম। তবে আর ডিটেলসলি যদি আপনি জানতে চান তাহলে অবশ্যই আজকের এই ব্লগটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
তাছাড়া এখানে অনেক ক্ষেত্রেই পাসপোর্ট করার জন্য আপনার বয়সের উপর নির্ভর করে পাসপোর্ট এর বিভিন্ন প্রয়োজন এ ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন। তো আপনার প্রাপ্তবয়স্ক/অপ্রাপ্তবয়স্কের ক্ষেত্রেও রয়েছে ডকুমেন্টস এর মধ্যে পার্থক্য।
এসব বিষয় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। তাই আমি রিকমেন্ট করব আপনি যদি আজকের এই নিবন্ধটি পড়েন তাহলে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
বয়স ১৮ বছরের উর্দ্ধ হলে পাসপোর্ট করতে যা যা লাগবে
আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের উর্দ্ধ হয়ে এবং সেই সাথে আইডি কার্ড থাকে তাহলে আপনার নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন পড়বে। পাসপোর্ট করাতে যা যা প্রয়োজন জেনে নিন-
- জাতীয় পরিচয় পত্র: সর্বপ্রথম আপনার যে জিনিসটা লাগবে সেটা হচ্ছে এন আইডি কার্ড, আর না থাকলে Nid card download করে নিন।
- ই পাসপোর্ট এর অ্যাপ্লিকেশন সামারি: আপনি অনলাইনে এই পাসপোর্ট এর আবেদন করার পরে একদম শেষে একটা সামারি পাবেন সেটা।
- পাসপোর্ট আবেদনের ফরম: অবশ্যই এটা ফরম কালেক্ট করে পূরণ করে নিবেন আপনার বিভিন্ন ইনফরমেশন দিয়ে।
- নাগরিক সনদ: এটা আপনার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় বা পৌঁছে কার্যালয়ে যোগাযোগ করে কালেক্ট করে নিতে পারেন।
- পেশাগত সার্টিফিকেট: আপনি যদি স্টুডেন্ট হন তাহলে একটা সার্টিফিকেট আর সরকারি চাকরিজীবী হলে অন্য একটি সার্টিফিকেটের প্রয়োজন পড়বে।
এনআইডি কার্ড না থাকলে পাসপোর্ট করাতে লাগবে যেসব জিনিস
আমাদের যাদের এখনও এনআইডি কার্ড হয় নাই কিন্তু ২০ বছর এর আগে। অর্থাৎ আপনার ২০ বছর হওয়ার আগেই যদি এন আইডি কার্ড না থাকে তাহলে আপনার জন্ম সনদ দিয়ে ই পাসপোর্ট এর আবেদন করতে পারবেন। তো ২০ বছরের আগেই আপনার এন আইডি কার্ড ছাড়া জন্ম সনদ দিয়ে পাসপোর্ট করাতে যেসব জিনিস লাগবে জেনে নিন-
- জন্ম নিবন্ধন: আপনার কাছে যদি জন্ম নিবন্ধন না থাকে সেটা জন্ম নিবন্ধন যাচাই এর মাধ্যমে কালেক্ট করে নিন অনলাইন থেকে।
- পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন ফরম: পাসপোর্ট এর আবেদন করতে আপনার একটা ফরমের প্রয়োজন পড়বে যেটা অনলাইনে পেয়ে যাবেন।
- ফি পরিশোধ রশিদ: পাসপোর্ট করার জন্য এই লিস্ট একটা ফি আপনাকে প্রদান করতে হবে। আর এই ফি’টা আপনি কিভাবে পরিশোধ করেছেন তার একটা রশিদ দিতে হবে।
- নাগরিক সনদ: সাধারণত এটা আপনার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় বা পৌরসভা কার্যালয়ে যোগাযোগ করে কালেক্ট করা হয়ে থাকে।
- স্টুডেন্ট সার্টিফিকেট: আপনার পেশা যদি স্টুডেন্ট (ছাত্র-ছাত্রী) হয়ে থাকে তাহলে স্টুডেন্ট সার্টিফিকেট লাগবে।
সরকারি চাকরিজীবী পাসপোর্ট করতে কি কি প্রয়োজন
সাধারণত সরকারি কর্মকর্তে যারা রয়েছে তারা যদি পাসপোর্ট করতে চায় তাহলে অন্যান্য জনসাধারণের চাইতে একটু কাগজপত্র বেশি লাগে। মূলত সরকারি কর্মকর্তার ক্ষেত্রে বিশেষ দুইটি যেমন GO & NOC এর প্রয়োজন পড়ে।
- government order : আপনি যদি সরকারি কোন কাজে বিদেশ গমন করেন তাহলে অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট এর নথিপত্রের সাথে GO (government order) সংযুক্ত করতে হবে।
- no objection certificate: যদি কোন সরকারি চাকরিজীবী নিজ ক্ষেত্রে (সরকারি কোনো কাজে নয়) পাসপোর্ট করাতে চাই তাহলে অবশ্যই তার বিবাদ অধিদপ্তর মন্ত্রণালয় থেকে অন আপত্তিকর সার্টিফিকেট বা no objection certificate এর প্রয়োজন পড়বে।
ছোট বাচ্চাদের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
ছোট বাচ্চাদের অনেক সময় তাদের মা-বাবার সাথে বিদেশে যেতে হয়। এখন আপনার শিশু কিংবা বাচ্চাও যদি আপনার সাথে যায় তাহলে অবশ্যই মা বাবার এনআইডি কার্ড বাধ্যতামূলকভাবে পাসপোর্ট ডকুমেন্টস গুলোর সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
- জন্ম নিবন্ধন: যেহেতু এখনো পর্যন্ত আপনার বাচ্চার এনআইডি কার্ড হয় নাই তাই অবশ্যই জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজন পড়বে। আর এটা চাইলে আপনি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
- মাতা-পিতার এনআইডি কার্ড: মাতা-পিতার এনআইডি কার্ড অফিসের সংযুক্ত করতে হবে অন্যান্য ডকুমেন্টস গুলোর সাথে।
- অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সামারি: অনলাইনে পাসপোর্ট এর আবেদন করার একদিন শেষ পর্যায়ে আপনি একটা অ্যাপ্লিকেশন সামারি পাবেন সেটা কালেক্ট করুন।
- অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম: অবশ্যই পাসপোর্ট এর আবেদন করার ক্ষেত্রে একটা ফরম পূরণ করতে হয় এটা কালেক্ট করুন এবং পূরণ করুন।
- বাচ্চার ছবি: পাসপোর্ট সাইজের আপনার বাচ্চার ছবি লাগবে এটা কালেক্ট করে রাখুন প্রয়োজনে আসতে পারে।
উপরের লেখাগুলো পড়ে হয়তো আপনি জানতে পারলেন পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে এই প্রশ্নের উত্তরটা। তাই আপনি এই রিলেটেড আরও জানতে আজকের নিবন্ধটা পড়তে থাকুন।
নতুন পাসপোর্ট বানাতে কি কি লাগে
আপনার বয়স বা পেশাগত ভিন্নতার কারণে আপনার পাসপোর্ট এর ডকুমেন্টস এর অভিন্নতা রয়েছে। আপনার শিশুর পাসপোর্ট করাতে যে ডকুমেন্টস গুলো লাগবে সেগুলো এবং আপনার মধ্যে পার্থক্য।
যদি ১৮ বছরের পরে অর্থাৎ এনআইডি কার্ড তাকে এমন অবস্থায় পাসপোর্ট করেন তাহলে নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্টস লাগবে। আর যদি আপনার বয়স ২০ বছর বা এর কম হয় আর এন আইডি কার্ড না থাকলে কিছু জিনিসের প্রয়োজন পড়বে।
বলতে গেলে আপনার বয়স কিংবা পেশাগত ধরনের উপর ভিত্তি করে আপনার বিভিন্ন ডকুমেন্টস লাগবে। তাছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য রয়েছে দুটি নির্দিষ্ট রিকোয়ারমেন্ট GO & NOC তো এগুলো কালেক্ট করুন।
এখন আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করব what does it take to get a passport এই প্রশ্নের উত্তরের বেশ কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এখানে আপনারা পাসপোর্ট করাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ যেগুলো অবশ্যই লাগে।
১. এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন
আপনার বয়স যদি ১৮ বছর পূর্ণ হয় তাহলে অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদনের মাধ্যমে এন আইডি করে ফেলবেন। তবে আপনার ২০ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত জন্ম নিবন্ধন দিয়েই পাসপোর্ট করাতে পারবেন।
আর ২০ বছর অতিক্রম করলে অবশ্যই আপনার এনআইডি কার্ডের প্রয়োজন পড়বে। তাই অবশ্যই আপনার যত দ্রুত সম্ভব nid করে ফেলবেন। আর তার আগে হলে অর্থাৎ ২০ বছর আগে হলে আপনার জন্ম সনদ দিয়েই করা যাবে পাসপোর্ট।
২. পাসপোর্ট ফি পরিশোধের রশিদ
আপনি যদি ব্যাংকের মাধ্যমে পাসপোর্ট এর ফি পরিশোধ করেন তাহলে অবশ্য চালানের মাধ্যমে করবেন। আর পরিশোধ করার পরে চালান কপিটা আপনাকে কালেক্ট করে রাখতে হবে এবং ডকুমেন্টস গুলোর সাথে পিনআপ করে দিতে হবে।
আর আপনি যদি অনলাইন গেটের মাধ্যমে পাসপোর্ট এর ফি পরিশোধ করে থাকেন তাহলে সেটা passport application summary মধ্যেই অটোমেটিক্যালি অ্যাড হয়ে যাবে আশা করি।
৩. পাসপোর্ট আবেদন সামারি
আপনি যখন অনলাইনে এই পাসপোর্ট এর আবেদন করবেন শেষ পর্যায়ে আপনি passport application summary বা অ্যাপ্লিকেশন আইডি কালেক্ট করার বা পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করার অপশন পাবেন।
সুতরাং যেহেতু পাসপোর্ট করার জন্য এই অ্যাপ্লিকেশন সামারির প্রয়োজন পড়ে তাই অবশ্যই এগুলো পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করে নিবেন। এক কথায় বলতে গেলে আপনি পাসপোর্টটা আবেদনের সময় যে সমস্ত ডকুমেন্টস দিয়েছিলেন সবগুলো কালেক্ট করে রাখবেন।
যেহেতু এই পাসপোর্ট অনলাইনে আবেদন করতে হয় তাই সেখানে জেনে যাবেন কি কি জিনিসের প্রয়োজন। তবে এই আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে না হলেও সংক্ষিপ্ত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি।
৪. পুলিশ ভেরিফিকেশন
পাসপোর্ট এর আবেদন কমপ্লিট হওয়ার পরে আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হবে। এক্ষেত্রে আপনারে বিভিন্ন বিষয়বস্তু যেমন ঠিকানা ইত্যাদি যাচাই-বাছাই করা হতে পারে।
এ পর্যন্ত আমি যথাযথ শেয়ার করার চেষ্টা করেছি মূলত পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে আপনার যেসব জিনিসের প্রয়োজন পড়বে। এছাড়াও ব্যক্তিভেদে, জায়গাভেদে অতিরিক্ত জিনিসের প্রয়োজন হতে পারে বা কমও লাগতে পারে।
যেভাবেই হোক আপনার নিকটস্থ বা সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করে জেনে নিবেন আপনার পাসপোর্ট করাতে যেসব জিনিসের প্রয়োজন।
পাসপোর্ট করার জন্য জন্ম নিবন্ধন/এন আইডি কার্ড, নাগরিক সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট ফি পরিষদের রশিদ, স্টুডেন্ট সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), পেশাগত সার্টিফিকেটের ফটোকপি ইত্যাদি।
আপনি যদি নতুন ই পাসপোর্ট করাতে চান তাহলে অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র আপনাকে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে যেমন এনআইডি/স্মার্ট কার্ডের ফটোকপি, ১৮ বছরের কম বয়সের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন, মা বাবার এনআইডি, ছবি ইত্যাদি লাগবে।
সাধারণত বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক তিন ধরনের পাসপোর্ট কাউন্ট করা হয় ১. কূটনৈতিক ২. দাপ্তরিক ৩. সাধারণ পাসপোর্ট। সাধারণ বলতে আমরা যেটা নিয়মিত ব্যবহার করি আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে।
যাদের অতি প্রয়োজনীয় কিংবা জরুরী ভিত্তিতে পাসপোর্ট লাগে তারা সুপার এক্সপ্রেস এর মাধ্যমে ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই পাসপোর্ট পেয়ে যেতে পারেন। তবে এটা কাউন্ট হবে আপনার বাইরে ঠিক প্রদানের পর থেকেই।
এমন একটি বৈধ আইডি যার মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গা, স্তল ভ্রমণের অনুমোদনের ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য। পাসপোর্ট এর মাধ্যমে বাছাইকৃত দেশের সমুদ্র বা স্থলের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমন করতে পারবে।
visa check | visa check with passport number |
number | passport check with number |
status check | passport status check |
check | passport check |
gov bd | Passport gov bd |